ইউক্রেন যুদ্ধে নিহত গৌরীপুরের ইয়াসিন
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
ময়মনসিংহ: ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলার যুবক ইয়াসিন শেখের ছোট থেকেই স্বপ্ন ছিলে সেনাবাহিনীতে চাকরি করার।নানা চেষ্টায় দেশে সে স্বপ্ন পূরণ না হলেও তার স্বপ্ন পূরণ হয় রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ দেওয়ার মাধ্যমে।রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যোগ দেন রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে।যুদ্ধ চলাকালীন ইউক্রেনের মিসাইল হামলায় থেমে গেল ইয়াসিনের সে স্বপ্নের যাত্রা।গত ২৭ মার্চ ইউক্রেনে যুদ্ধরত অবস্থায় নিহত হন ইয়াসিন শেখ।২৭ মার্চ ইয়াসিন মারা গেলেও তার পরিবারের লোকজন জানতে পারে ঈদের পরদিন।এ তথ্য জানায়,রাশিয়ায় থাকা ইয়াসিনের বন্ধু মেহেদী।মুত্যৃর খবর জানার পর থেকে ইয়াসিনের পরিবারে চলছে শোকের মাতম।এলাকায় নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
গৌরীপুরের ডৌহাখলা গ্রামের মৃত সত্তর মিয়ার ছোট ছেলে ইয়াসিন শেখ।চার ভাইবোনের মধ্যে দু’জন আগেই মারা গেছেন।মা আর বড় ভাইকে নিয়ে ছিল তার সংসার।বড় ভাই ব্যবসায়ী রুহুল আমিন তার পড়াশোনা ও বিদেশযাত্রার খরচ বহন করেন।সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ছেলের ছবি নিয়ে কান্না করছেন মা।কিছুতেই থামছে না মায়ের কান্না। শোকে কাতর পরিবারের সদস্যরা।এদিকে ছেলের লাশ ফিরে পেতে কেঁদে বুক ভাসাচ্ছেন মা ফিরোজা খাতুন।ছেলের মৃত্যুর খবর শোনার পর থেকেই সর্বদা বিলাপ করেই চলেছেন তিনি।মা ফিরোজা খাতুনের দাবি,অন্তত ছেলের মরদেহ যেন তিনি শেষবারের মতো দেখতে পারেন।এদিকে এ ঘটনার খবর পেয়ে গৌরীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি সুনন্দা সরকার প্রমা মরিচালি গ্রামে ইয়াসিনের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের খোঁজ-খবর নেন।এবং তাদের সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করেন।ইয়াসিনের চাচাতো ভাই রফিকুল ইসলাম রবি জানান, রাশিয়ায় যাওয়ার জন্য ঢাকায় একটি প্রতিষ্ঠানে রাশিয়ান ভাষা শেখে ইয়াসিন।পরে বন্ধুর সহায়তায় ইয়াসিন রাশিয়ায় একটি কোম্পানিতে ভালো চাকরি পায়।
চাকরি করার সময় রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে চুক্তিভিত্তিক যোদ্ধা হিসেবে যোগদানের সুযোগ পেয়ে যান।পরে তিনি রাশিয়ান সেনাবাহিনীতে যোগ দিয়ে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।রাশিয়ায় যাওয়ার সময় ইয়াসিনের মা ও বড় ভাইকে গাড়িতে করে ঢাকায় নিয়ে অনাপত্তিপত্রে তাদের স্বাক্ষর নেয় রাশিয়ায় পাঠানো এজেন্সির লোকজন।গত ২৬ মার্চ তার মায়ের সঙ্গে শেষবারের মতো কথা বলে ইয়াসিন।কয়েকদিনের মধ্যেই দশ লাখ টাকা পাঠাবে বলে মাকে জানিয়েছিল ইয়াসিন।নিহতের মরদেহ কীভাবে দেশে আনা হবে তার কিছুই জানে না পরিবারের লোকজন।তারা অজানা আশায় আছেন।এ বিষয়ে গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাজ্জাদুল হাসান জানান,বিষয়টি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়সহ সরকারের ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।এ ব্যাপারে সকল প্রকার আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং আমরা সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করবো।আমরা চাই পরিবারটি যেন তাদের সন্তানের লাশ দেশে এনে দাফন করতে পারে।