শহীদজায়া অধ্যাপিকা পান্না কায়সারের মৃত্যুতে নির্মূল কমিটির গভীর শোক প্রকাশ

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বরেণ্য লেখক সাংবাদিক শহীদুল্লা কায়সারের সহধর্মিণী, ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপিকা পান্না কায়সারের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি।আজ সংগঠনের উপদেষ্টা পরিষদ ও কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী পরিষদ কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক শোক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়‘মুক্তিযুদ্ধে শহীদ বরেণ্য লেখক সাংবাদিক শহীদুল্লা কায়সারের সহধর্মিণী, ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এবং বর্তমানে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য অধ্যাপিকা পান্না কায়সার আজ (০৪ আগস্ট) সকালে তাঁর ইস্কাটনের বাসভবনে ঘুমন্ত অবস্থায় হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন। তাঁর আকস্মিক মৃত্যুতে আমরা অত্যন্ত শোকাভিভূত।

মুক্তিযুদ্ধে দেশবরেণ্য বুদ্ধিজীবী শহীদুল্লা কায়সারকে হারানোর পর শহীদজায়া পান্না কায়সারকে এক কঠিন সংগ্রামের ভেতর কাল অতিবাহিত করতে হয়েছে। সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করে তিনি তাঁর দুই সন্তানÑ কন্যা শমী কায়সার ও পুত্র অমিতাভ কায়সারকে দেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের প্রগতিশীল সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনে মুক্তিযুদ্ধে নিহত স্বামীর অসমাপ্ত কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন। প্রয়াত পান্না কায়সার উদীচী ও খেলাঘরসহ বহু সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা বিধৃত করে ‘মুক্তিযুদ্ধ : আগে ও পরে’সহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ রচনা করেছেন।১৯৭২ সালের মার্চে একাত্তরের গণহত্যাকারী ও বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে অন্যান্য শহীদ পরিবারের সঙ্গে পান্না কায়সার রাস্তায় নেমেছিলেন। ১৯৯২ সালে শহীদজননী জাহানারা ইমাম ও কবি সুফিয়া কামালের নেতৃত্বে ‘একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি’ গঠনকালে পান্না কায়সার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এর ঠিক আগে তাঁর ইস্কাটনের বাসভবনেই মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের সন্তানদের সংগঠন ‘প্রজন্ম ’৭১’ গঠিত হয়। গত তিন দশক ধরে নির্মূল কমিটির বিভিন্ন কার্যক্রমের সঙ্গে তিনি সক্রিয়ভাবে যুক্ত থেকেছেন এবং সংগঠনের তরুণ নেতা ও কর্মীদের অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করেছেন।
‘অধ্যাপিকা পান্না কায়সারের আকস্মিক মৃত্যুতে আমাদের প্রগতিশীল সামাজিক সাংস্কৃতিক আন্দোলনের নেতৃত্বে যে শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে, তা সহজে পূরণ হবার নয়। আমরা প্রয়াত পান্না কায়সারের পরিবারের সদস্যবৃন্দ, সহযোদ্ধা ও গুণগ্রাহীদের প্রতি গভীর সমবেদনা ও সহমর্মিতা জ্ঞাপন করছি’
স্বাক্ষরদাতা
বিচারপতি শামসুল হুদা, বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ, অধ্যাপক অনুপম সেন, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার, সমাজকর্মী মালেকা খান, শিল্পী হাশেম খান, শিল্পী রফিকুননবী, অধ্যাপিকা মাহফুজা খানম, জননেতা ঊষাতন তালুকদার, চলচ্চিত্রনির্মাতা নাসির উদ্দিন ইউসুফ, অধ্যাপক ডাঃ কাজী কামরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন (অবঃ) আলমগীর সাত্তার বীরপ্রতীক, ক্যাপ্টেন (অবঃ) সাহাবউদ্দিন আহমেদ বীরউত্তম, মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আবদুর রশীদ (অবঃ), অধ্যাপক ডাঃ আমজাদ হোসেন, ড. নূরন নবী, লেখক সাংবাদিক শাহরিয়ার কবির, অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন, শহীদজায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শহীদজায়া সালমা হক, কলামিস্ট সৈয়দ মাহবুবুর রশিদ, শিক্ষাবিদ মমতাজ লতিফ, অধ্যাপক শিল্পী আবুল বারক আলভী, সমাজকর্মী কাজী মুকুল, কথাশিল্পী অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল, যাত্রাশিল্পী মিলন কান্তি দে, আবৃত্তিশিল্পী মোঃ শওকত আলী, অধ্যাপক মেজবাহ কামাল, ডাঃ শেখ বাহারুল আলম, ড. মেঘনা গুহঠাকুরতা, ডাঃ ইকবাল কবীর, সমাজকর্মী সুব্রত চক্রবর্ত্তী, ভূতত্ত্ববিদ মকবুল-ই এলাহী চৌধুরী, সমাজকর্মী শফিকুর রহমান শহীদ, এডভোকেট আবদুস সালাম, অধ্যাপক মোহাম্মদ সেলিম, অধ্যাপক আবদুল গাফ্ফার, কবি জয়দুল হোসেন, সমাজকর্মী কাজী লুৎফর রহমান, সমাজকর্মী কামরুননেসা মান্নান, এডভোকেট আজাহার উল্লাহ্ ভূঁইয়া, অধ্যাপক ডাঃ উত্তম কুমার বড়ুয়া, সঙ্গীতশিল্পী জান্নাত-ই ফেরদৌসী লাকী, অধ্যাপক ডাঃ মামুন আল মাহতাব, সাংবাদিক শওকত বাঙালি, অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান, অধ্যাপক ডাঃ নুজহাত চৌধুরী শম্পা, লেখক আলী আকবর টাবী, এডভোকেট কাজী মানছুরুল হক খসরু, এডভোকেট দীপক ঘোষ, অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট ড. কানিজ আকলিমা সুলতানা, ব্যারিস্টার নাদিয়া চৌধুরী, সাংবাদিক মহেন্দ্র নাথ সেন, শহীদসন্তান তৌহিদ রেজা নূর, শহীদসন্তান শমী কায়সার, শহীদসন্তান আসিফ মুনীর তন্ময়, শহীদসন্তান তানভীর হায়দার চৌধুরী শোভন, মানবাধিকারকর্মী তরুণ কান্তি চৌধুরী, লেখক সাংবাদিক সাব্বির খান, মানবাধিকারকর্মী আনসার আহমদ উল্লাহ, মানবাধিকারকর্মী স্বীকৃতি বড়ুয়া, এডভোকেট আবদুল মালেক, লেখক কলামিস্ট মিথুশিলাক মুর্মু, কলামিস্ট অনলাইন এ্যাক্টিভিস্ট লীনা পারভীন, মানবাধিকারকর্মী রহমান খলিলুর, সমাজকর্মী হারুণ অর রশীদ, এডভোকেট মালেক শেখ, সহকারী অধ্যাপক তপন পালিত, সাংবাদিক দিলীপ মজুমদার, সমাজকর্মী রাশেদুল ইসলাম, সমাজকর্মী ইস্রাফিল খান বাপ্পি, সমাজকর্মী শিমন বাস্কে, সমাজকর্মী শেখ আলী শাহনেওয়াজ পরাগ, সমাজকর্মী সাইফ উদ্দিন রুবেল, লেখক ও চলচ্চিত্রনির্মাতা শাকিল রেজা ইফতি, সমাজকর্মী ফয়সাল হাসান তানভীর প্রমুখ।

বিশেষ বিজ্ঞপ্তি:আগামী ০৬ আগস্ট সকাল সাড়ে ১০টায় সর্বস্তরের নাগরিকদের শ্রদ্ধাজ্ঞাপনের জন্য অধ্যাপিকা পান্না কায়সারের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে রাখা হবে এবং বাদ জোহর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে তৃতীয় জানাজার পর মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী গোরস্থানে সমাহিত করা হবে।

You might also like