শুভ জন্মদিন হ‌ুমায়ূন আহমেদ

নিউজডেস্ক
সত্যবাণী

বিনোদনঃ হলুদ পাঞ্জাবি পরে হ‌ুমায়ূন আহমেদের ভক্তরা আজও হেঁটে চলেছেন তার তৈরি ময়ূরাক্ষী নদীর তীর ধরে। তার সঙ্গে যেন দেখছেন উপচেপড়া জোছনা,টাপুর-টুপুর বৃষ্টি আর মধ্যরাতের অচেনা শহরটাকে।আজ (১৩ নভেম্বর) বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রভাবশালী ঔপন্যাসিক,নির্মাতা,নাট্যকার হ‌ুমায়ূন আহমেদের ৭২তম জন্মবার্ষিকী।যার হাত ধরে সৃষ্টি হয়েছে অনবদ্য চরিত্র হিমু,মিসির আলি,রূপা, শুভ্রদের মতো তুমুল জনপ্রিয় অদৃশ্য চরিত্র।
হ‌ুমায়ূন আহমেদ তার কীর্তি রেখেছেন শিল্প-সাহিত্যের বেশিরভাগ শাখাতেই। একাধারে তিনি সাহিত্য দিয়ে মন্ত্রমুগ্ধ রেখেছেন বাংলার মানুষকে, অন্যদিকে নির্মাণ করেছেন অনন্য সব নাটক, চলচ্চিত্র ও গান। তার হাত ধরেই তারকার সম্মান পেয়েছেন এ দেশের অনেক শিল্পী।

তার নির্মাণে উঠে এসেছে নৈসর্গিক দৃশ্য, জোছনা, বৃষ্টিসহ বাংলার অসামান্য সব ব্যঞ্জনা। তরুণ প্রজন্মকে ভিন্নভাবে প্রকৃতি চিনিয়েছেন এই দার্শনিক লেখক।বাংলা সাহিত্য, নাটক, চলচ্চিত্র ও গান পালাবদলের এ কারিগর ১৯৭২ সালে প্রকাশিত প্রথম উপন্যাস ‘নন্দিত নরকে’ দিয়ে নিজের জানান দেন। এরপর তিন শতাধিক গ্রন্থ লিখেছেন তিনি।টেলিভিশন নাটকেও আনেন ভিন্ন অধ্যায়।এসেছে বাকের ভাই, বদি, মুনা, লবঙ্গ, তিতলি,কঙ্কা, হাসান, ছোট চাচা,বড় চাচার মতো অনবদ্য সব চরিত্র।১৯৯০-এর গোড়ার দিকে চলচ্চিত্র নির্মাণ শুরু করেন।তার পরিচালনায় প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ মুক্তি পায় ১৯৯৪ সালে। ২০০০ সালে ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ ও ২০০১ সালে ‘দুই দুয়ারী’ দর্শকদের দারুণ গ্রহণযোগ্যতা পায়।২০০৩-এ নির্মাণ করেন ‘চন্দ্রকথা’।১৯৭১-এ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ২০০৪ সালে নির্মাণ করেন ‘শ্যামল ছায়া’ সিনেমাটি।এটি ২০০৬ সালে ‘সেরা বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র’ বিভাগে অ্যাকাডেমি পুরস্কারের জন্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল। এছাড়াও এটি কয়েকটি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হয়। এরপর ২০০৬ সালে মুক্তি পায় ‘৯ নম্বর বিপদ সংকেত’।

২০০৮-এ ‘আমার আছে জল’ চলচ্চিত্রটি তিনি পরিচালনা করেন। ২০১২ সালে তার পরিচালনার সর্বশেষ ছবি ‘ঘেটুপুত্র কমলা’ মুক্তি পায়। যা দেশ-বিদেশে প্রচুর আলোচনায় আসে। তার চলচ্চিত্রের মৌলিক গানগুলো তিনি নিজেই রচনা করেন, যার বেশিরভাগই পায় তুমুল জনপ্রিয়তা।কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারসহ দেশ-বিদেশে বিভিন্ন পুরস্কার ও সম্মাননা পেয়েছেন তিনি।হ‌ুমায়ূন আহমেদের জন্ম নেত্রকোনার কুতুবপুরে, ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ছিলেন পুলিশ কর্মকর্তা ও মুক্তিযোদ্ধা।মুক্তিযুদ্ধে তিনি পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তাদের দোসরদের হাতে শহীদ হন।মায়ের নাম আয়েশা ফয়েজ। তার দুই ভাই মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও আহসান হাবীব। প্রত্যেককেই লেখালেখিতে পাওয়া গেছে।এদিকে আজ (১৩ নভেম্বর) এই কিংবদন্তির জন্মদিন উপলক্ষে বিশেষ বিশেষ আয়োজন করা হচ্ছে তার জন্মস্থান নেত্রকোনা এবং সবচেয়ে প্রিয় স্থান গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে।

You might also like