সম্মিলিত সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ ইউকে’র সাথে ইব্রাহিম চৌধুরী খোকনের আড্ডা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
সত্যবাণী

লন্ডন, ৮ নভেম্বর: সম্মিলিত সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ ইউকে আয়োজিত আড্ডায় সাংবাদিক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন বলেন, আমি মানুষের ভালোবাসার মাঝে বেঁচে থাকতে চাই। পূর্ব লন্ডনের প্রিন্সলেট স্ট্রিটে অবস্থিত লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবে গত ৭ নভেম্বর বিকেলে বসে ব্রিটেন সফরে আসা যুক্তরাষ্ট্রবাসী সাংবাদিক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকনকে নিয়ে এক অন্তরঙ্গ আড্ডা।

প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সংস্করণ সম্পাদক ইব্রাহিম চৌধুরী খোকন এক সংক্ষিপ্ত সফরে সম্প্রতি ব্রিটেনে এসেছেন। লন্ডনের লেখক, সংস্কৃতিকর্মী ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে আড্ডাটি হয়ে ওঠে মনোমুগ্ধকর ও প্রাণবন্ত। সম্মিলিত সাহিত্য ও সংস্কৃতি পরিষদ ইউকের সভাপতি লেখক ময়নূর রহমান বাবুলের সভাপতিত্বে আড্ডায়  ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করা বাঙালির সংগ্রামী জীবন, সাহিত্যর্চ্চা, সাংবাদিকতা এবং সংস্কৃতিচর্চার উজ্জ্বল দিক  ও প্রতিকূলতা নিয়ে আলোচনা করেন উপস্থিত সুধীবৃন্দ।

আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল খোকনের স্বভাবসুলভ প্রাণবন্ত বক্তব্য। খোকন বলেন, আমি স্কুলে দেখতে ছিলাম ছোটখাটো মানুষ এবং নিরীহ। আমাকে আমার সতীর্থরা ছোট খোকনই ডাকতেন। পরবর্তীতে কলেজ জীবনে কখন কিভাবে যেন হয়ে ওঠি মিছিলের মানুষ, শ্রমিকদের সংগঠক। হয়ে ওঠি নাট্যকর্মী, সাংবাদিক। যেখানে নতুন কিছু সেখানেই আমি একজন উদ্যোগী কর্মী। প্রথম আলো উত্তর আমেরিকা সংস্করণ সম্পাদনার দায়িত্ব পাওয়া এমনিই এক স্বীকৃতি। মানুষের ভালোবাসাই আমাকে চালিত করে। আমি আড্ডার মানুষ, প্রথম আলো‘তেও লেখক সৃষ্টির আড্ডা গড়ে তুলেছি। অনেক নতুন লেখক আমার প্রাণ। সর্বোপরি আমি কাজের  ক্ষেত্রে সৎ থাকার চেষ্টা করি।

বাংলাদেশে থাকাকালিন শিক্ষাঙ্গন থেকে শুরু করে রাজনীতির অঙ্গনের বড়দের প্রতি সম্মানজনক আচরণ ছিল  সম্পর্কের সেতু বর্ণনা করে খোকন বলেন, রাজনৈতিক মতাদর্শ ভিন্ন হলেও বড়দের পাশেই বসতাম না। আন্দোলন সংগ্রামে এমনি মধুর ও ভ্রাতৃত্বসুলভ সম্পর্ক ও মুল্যবোধ আজও আমাদের সম্বল।

আলোচনায় অংশ নেন কবি হামিদ মোহাম্মদ, সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন,কবি আতাউর রহমান মিলাদ, গবেষক ফারুক আহমদ, কবি মোসাইদ খান, লেখক আনোয়ার শাহজাহান, দর্পন সম্পাদক রহমত আলী, টাওয়ার হ্যামলেটস কাউন্সিলের সাবেক স্পীকার আহবাব হোসেন, কবি শামীম আহমদ, ছড়াকার সৈয়দ হিলাল সাইফ, কবি মুহাম্মদ মুহিদ, সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান  শানুর, সংস্কৃতিকর্মী নূরুল ইসলাম, হেলেন ইসলাম, গোলাপগঞ্জ হেলপিং হ্যান্ডসের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাহিন মাহমুদ, কবি মুজিবুল হক মনি,  গোলাপগঞ্জ এডুকেশন ট্রাস্ট ইউকের জেনারেল সেক্রেটারি আবদুল বাসির, কবি আজিজুল আম্বিয়া, আবদুর রহমান জিলানী, আবদুল মালিক খোকন ও ইব্রাহিম চৌধুরী খোকনের স্কুল জীবনের সহপাঠীদের মধ্যে আবদুল হাকিম, মিনহাজ আহমদ চৌধুরী, সয়েফ উদ্দিন আহমদ, এ এফ এম সৌদ। এছাড়া আড্ডায় উপস্থিত ছিলেন ব্রিটেন সফররত বীরমুক্তিযোদ্ধা কর্নেল আবদুস সালাম বীরপ্রতীক। তিনি উপস্থিত সকলকে শুভেচ্ছা জানান।

হামিদ মোহাম্মদ বলেন, খোকন আশি ও নব্বই দশকে সামরিক শাসনবিরোধী রাজনৈতিক ও ছাত্র আন্দোলনে ঝড়াকু সৈনিক ছিলেন। হতাশাগ্রস্ত রাজনৈতিক অঙ্গনে এসময় এক ঝাঁক প্রতিবাদী তরুণ রাজপথ কাঁপানো স্বৈরাচার পতনে সাহসী ভূমিকা রাখেন। খোকন সেই প্রজন্মের অগ্রসৈনিক।  খোকন রাজনীতির বাইরে ছিলেন সংবাদকর্মী ও সাংস্কৃতিক যোদ্ধাও। সাংবাদিক নজরুল ইসলাম বাসন বলেন, খোকনকে আলাদাভাবে পরিচয় করিয়ে দেয়ার মত নয়, সে নিজেই একজন কৃতীমান বহুমাত্রিক গুণের অধিকারী। আর এখানে যারা আছেন সকলেই কৃতীমান, সুনাম রয়েছে লেখক ও সংস্কৃতিকর্মী হিসাবে।

ফারুক আহমদ বলেন, খোকন একজন অনুপ্রেরণাদায়ক লেখক ও সাংবাদিক। তাঁর কর্ম অনেক বিস্তৃত। তাঁর কর্মময় জীবন নিয়ে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করলে নতুন প্রজন্ম উৎসাহিত হবে। তরুণদের নিয়ে কেউ তেমন লিখে না। তরুণদের কাজের মূল্যায়ন জরুরী। আড্ডায় উপস্থিত লেখকদের উদ্যোগ নিতে তিনি অনুরোধ করেন।

আড্ডায় উপস্থিত চার সতীর্থ তাদের স্কুল জীবনের আনন্দঘন স্মৃতিচারণ করেন। খোকনও হাস্যরসাত্মক নানা গল্পে সতীর্থদের কথা তুলে ধরেন।

You might also like