বুড়িগঙ্গায় লঞ্চডুবি সুমনের নামে ভাইরাল হওয়া সেই ব্যক্তি এএসআই আক্কাস

নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী

ঢাকাঃ বুড়িগঙ্গায় মর্নিং বার্ড লঞ্চডুবির প্রায় ১৩ ঘন্টা পর সুমন বেপারী নামের এক ব্যক্তির জীবত উদ্ধার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল বিতর্ক চলছে।একপক্ষ ডুবে যাওয়া লঞ্চে ১৩ ঘণ্টা কিভাবে একজন মানুষ বেঁচে থাকেন- সেই প্রশ্ন তুলছেন। অন্যপক্ষ নানা বৈজ্ঞানিক যুক্তি তুলে ধরে এর চেয়ে বেশি সময়ও পানির নিচে বেঁচে থাকা যায় বলে তথ্য প্রমাণ হাজির করছেন।

এসবের মধ্যেই ফেসবুকে একটি ছবি ভাইরাইল হয়েছে, যে ছবিতে উদ্ধার যানে থাকা এক ব্যক্তিকে জীবিত উদ্ধার হওয়া সুমন বেপারী বলে দাবি করা হয়। বিভিন্নজন সেই ছবিটি পোষ্ট করে দাবি করছেন, সুমন বেপারীকে উদ্ধার যানে দেখা যাচ্ছে! তাহলে তিনি ১৩ ঘণ্টা ধরে ডুবে যাওয়া লঞ্চে ছিলেন কি করে?। উদ্ধারের পর সুমন বেপারীর ছবির সঙ্গে সেই ছবিতে থাকা ব্যক্তির চুল, দাঁড়ি, মুখমণ্ডল, শরীরের গড়ন পর্যন্ত মিলিয়েও ফেলছেন কেউ কেউ!ছবিটি ভাইরাল হওয়ার পর অনেকটা চুপসে যান ‘জীবিত উদ্ধার’ হওয়ার পক্ষে থাকা ফেসবুক গ্রুপের সদস্যরা। অনেকেই হিসাব মেলাতে পারছেন না! এতে ভার্চুয়াল দুনিয়ায় গুঞ্জনের নানা ডালপালাও ছড়ায়।জানা গেল, সুমন বেপারী নামে ভাইরাল হওয়া ব্যক্তি সুমন বেপারী নন। ওই ছবিতে থাকা লোকটির নাম আক্কাস আলী। তিনি নৌ পুলিশের ঢাকার সদরঘাট থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই)। লঞ্চডুবির পর তিনি ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালন করেন।নৌ পুলিশের ঢাকা জোনের পুলিশ সুপার খন্দকার ফরিদুল ইসলামও জানিয়েছেন, সুমন বেপারী নামে ভাইরাল হওয়া ছবির ব্যক্তি এএসআই আক্কাস আলী।

তিনি বলেন, সুমন বেপারী ১৩ ঘণ্টা পর জীবিত উদ্ধার হয়েছেন-এটা নিয়ে নানা জনের নানা সন্দেহ থাকতে পারে। কিন্তু দায়িত্বরত পুলিশের একজন সদস্যকে সুমন বেপারী নামে পরিচয় দিয়ে সাইবার স্পেসে গুজব ছড়ানো আপত্তিকর।নৌ পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ফেসবুক ব্যবহার করে এসব গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করা হবে।নৌ পুলিশের সদরঘাট থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, এসআই আক্কাস আলী লঞ্চডুবির পর ঘটনাস্থলে দায়িত্ব পালন করেন। ওই সময় কেউ ছবিটি তুলতে পারেন। কিন্তু সুমন বেপারী যখন উদ্ধার হন, তখন আক্কাস সেখানে ছিলেন না। এরপরও এএসআই আক্কাসকে সুমন বেপারী বলে গুজবমছড়ানো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার সকালে মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা মর্নিং বার্ড লঞ্চটি সদরঘাটের অদূরে অন্য একটি লঞ্চের ধাক্কায় তলিয়ে যায়। এতে ৩৪ জন নিহত হন। ঘটনার দিন রাত ১০টার দিকে লঞ্চটি টেনে তোলার সময় এক ব্যক্তি হাত উচু করে সাঁতরিয়ে বাঁচার আকুতি জানান। উদ্ধারকর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিলে নিজের নাম সুমন বেপারী বলে জানান। তিনি ওই লঞ্চের যাত্রী ছিলেন বলে জানান। ডুবে যাওয়ার সময় লঞ্চের নিচে আটকা পড়ার কথাও জানান তিনি।

You might also like