ছাতকে করোনাকালে পদক্ষেপ প্রশংসিত
শামীম আহমদ তালুকদার
সত্যবাণী
সুনামগঞ্জ থেকেঃ করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার মানুষের মধ্যেই জনসচেতনা বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন ছাতকে কর্মরত পুলিশ ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা।উপজেলাবাসীকে খাদ্যসামগ্রী সহায়তা, স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও আইনশৃঙ্খলা নিশ্চিতকরণ, সরকারি ত্রাণে সুষ্ঠু বণ্টনসহ ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম কবিরের নেতৃত্বে ১৩টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার প্রায় দুই শতাধিক যুবকদের যুদ্ধের মূলমন্ত্রে ঐক্যবদ্ধ করে করোনা পরিস্থিতিতে স্বেচ্ছায় কাজ করার জন্য স্বেচ্ছাসেবক টিম গঠন করে বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন।সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাপশ শীল ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোস্তফা কামাল হোম কোয়ারেন্টিন নিশ্চিতকরণ, বাজারমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আক্রান্ত রোগীদের হাসপাতালে পৌঁছানো, সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিতকরণ, লকডাউন সফল করতে দিনরাত কাজ করে চলেছেন। পাশাপাশি মহামারি করোনা যুদ্ধেও এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমুন্নত রাখতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন তারা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে তাদের নেতৃত্বে উপজেলা, স্বাস্থ্য বিভাগ ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রমে প্রশংসিত হয়ে উঠছেন উপজেলাবাসীর কাছে।জানা যায়, ছাতকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত পাঁচ পরিবারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করেছেন তারা। ওই সব পরিবারে থাকা শিশুদেরও খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে লকডাউনে থাকা ওই সব পরিবারে নিয়মিত খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারি, বিভিন্ন ব্যক্তি ও সামাজিক সংগঠণের মাধ্যমে কর্মহীন পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। তারা প্রতিনিয়ত কর্মতৎপরতার মধ্যে সরকারি নির্দেশনার আলোকে এলাকার জনপ্রতিনিধি, সমাজসেবক ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সাথে করোনাবিষয়ক সচেতনতামূলক মতবিনিময় অব্যাহত রেখেছেন।এলাকাভিত্তিক ব্যক্তি উদ্যোগে করোনায় কর্মহীন হয়ে পড়া পরিবারের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণকারীদের করোনা সচেতনতা ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচলের নির্দেশনাও প্রদান করছেন। প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলার গ্রামের মানুষকে সচেতন করতে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে এলাকায় এলাকায় মাইকিং ও জীবাণুনাশক স্প্রেও করছেন। উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে জনসমাগম এড়ানোর জন্য কয়েকটি বড় বাজার খোলা মাঠে স্থানান্তর করেছেন। স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানে সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। এ ছাড়া উপজেলার সকল সাপ্তাহিক হাট বন্ধ রেখেছেন। এসব স্বেচ্ছাসেবকদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে পিপিই প্রদান করা হয়েছে। অন্যদিকে গ্রাম পর্যায়ে উপজেলার ডাক্তার, স্বাস্থ্যকর্মী ও কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রভাইডারদের মাধ্যমে সচেতনতামূলক কার্যক্রম অব্যহত রয়েছে বলে জানা গেছে। এসব কাজে ছাতক উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের সকল কর্মকান্ড সর্বমহলে প্রশংসিত।
অন্যদিকে ছাতকের রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন প্যাকেজে যারা ত্রাণ বিতরণ করছেন তাদেরকে মোবাইল ফোনে উৎসাহিত ও অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন উপজেলা প্রশাসন। এ ব্যাপারে ছাতক সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মইন উদ্দিন আহমদ বলেন, করোনাযুদ্ধ মোকাবেলায় ছাতক উপজেলা প্রশাসনের কার্যক্রম সাধারণ মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে মানুষ তাদেরকে পাশে পাচ্ছে। সকলের সহযোগিতায় আমাদের এই দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে হবে।ছাতক থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মোস্তফা কামাল জানান, করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে সকলকে সচেতন থাকতে হবে। এ যুদ্ধ আমাদের একার নয়। পুলিশ সদস্যরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে উপজেলাবাসীকে সচেতন রাখতে কাজ করে চলেছেন। এতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন। সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাপশ শীল বলেন, ঝুঁকি উপেক্ষা করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে মানুষকে সচেতন করতে মাঠে কাজ করতে হচ্ছে। ছাতকবাসীকে বলবো আপনারা যত সম্ভব ঘরে থাকুন। সরকারি সকল আইন মানুন। আপনাদের প্রয়োজনে আমরা পাশে আছি। ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. গোলাম কবির বলেন, উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকার পাশাপাশি উপজেলাবাসীর ভূমিকাও অনেক। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অসহায় কর্মহীন পরিবারে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া রাজনৈতিক, সামাজিক সংগঠন ও ব্যক্তি উদ্যোগে ছাতকের কর্মহীন পরিবারে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও উৎসাহ যোগানো হচ্ছে।সরকারি সাহায্য অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানান।স্থানীয় সংসদ সদস্য মুহিবুর রহমান মানিক জানান, করোনা সংক্রমণরোধে জনসচেতনতার বিকল্প নেই, ঝুঁকি উপেক্ষা করে প্রশাসনের কর্মকর্তারা মানুষকে সহায়তার পাশাপাশি সচেতন করার লক্ষ্যে নিরলসভাবে যে কাজ করে যাচ্ছেন তা প্রসংশার দাবিদার। তিনি জানান, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে ইনশাল্লাহ আমরা এ যুদ্ধেও জয়ী হব। এ জন্য নিজ নিজ জায়গা থেকে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।