করোনা ও সেন্ট্রাল ভিস্টা
দিলীপ মজুমদার
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ভারত সরকারের বিরুদ্ধে এ রাজ্যের সাধারণ মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে।তারা দেখেছে আট দফা ভোটের ব্যবস্থা করে,বাইরের থেকে নেতাদের এনে গোটা এপ্রিল মাস তাঁরা যে কীর্তন করে গেছেন,তাতে লাফিয়ে বেড়েছে করোনা।ভোটের পরে পরাজয় মেনে নিতে চান নি তাঁরা।তাই ভোট শেষ হতে না হতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার আবেদন জানিয়েছেন।ভোট পরবর্তী হিংসা বন্ধ করার দাবিতে সভা করে সাম্প্রদায়িক ইন্ধন সৃষ্টি করার চেষ্টা করে চলেছেন।সেই সঙ্গে তেল. পেট্রোল এসবের মূল্যবৃদ্ধি তো আছেই।
রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ক্রমাগত বাড়ছে।অথচ অক্সিজেন নেই,করোনা সংক্রান্ত ওষুধের কালোবাজার শুরু হয়েছে।শুরু হয়েছে টিকা রাজনীতি।শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, অন্যান্য রাজ্যেও চাহিদামতো প্রতিষেধক পাঠাচ্ছে না কেন্দ্র।১৮-৪৫ বছর বয়সীদের টিকাকরণের ঘোষণা করেও তার থেকে পিছিয়ে গেছে কেন্দ্র।যে প্রধানমন্ত্রী ‘টিকা উৎসবের’ গালভরা ঘোষণা করেছিলেন,সেই প্রধানমন্ত্রীর ব্যথর্তার তীব্র সমালোচনা করছেন সুপ্রিম কোর্ট,দিল্লি হাইকোর্ট,মাদ্রাজ হাইকোর্ট,কলকাতা হাইকোর্ট, ইলাহবাদ হাইকোর্ট।সম্প্রতি ল্যানসেট তো প্রধানমন্ত্রীকে তুলোধোনা করেছেন করোনা নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে।
এরকম পরিস্থিতিতে ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের একটি প্রকল্পের কাজ কিন্তু বন্ধ হয় নি।সেটাও ক্ষোভের অন্যতম কারণ । প্রকল্পটির নাম ‘সেন্ট্রাল ভিস্টা’। রাষ্ট্রপতি ভবন থেকে ইন্ডিয়ে গেট পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ রাজপথ ঢেলে সাজানো হবে।নতুন করে সাজানো হবে লন,রাজপথের দুপাশে হাঁটার রাস্তা,অনুষ্ঠানের জায়গা,এবং প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন,সংসদ ভবন, উপরাষ্ট্রপতির ভবন এসব।দেশ যখন আতঙ্কে অস্থির,করোনা আক্রান্তের সংখ্যা যখন বিশ্বসভায় শ্রেষ্ঠ আসন নিয়েছে, তখন এই সেন্ট্রাল ভিস্টার কাজ চালিয়ে যাওয়া শুধু অমানবিকতা নয়,নিষ্ঠুরতাও।এ যেন সেই রোম সম্রাট নিরোর আচরণ । রোম জ্বলছে মন বলছে নিরো বাজায় বাঁশি।অবশ্য মোদি সাহেবদের এ হেন নিষ্ঠুরতা আমরা দেখেছি রাম মন্দির নির্মাণে,রামায়ণ মিউজিয়ম গঠনে,সর্দার বল্লভভাই পটেলের বিশাল মূর্তি নির্মাণে ।
লেখক: কলামিষ্ট, ফেলোশীপ প্রাপ্ত গবেষক, সত্যবাণীর কন্ট্রিবিউটিং কলামিষ্ট।