সুইস নির্মূল কমিটির শহীদ জননী জাহানারা ইমামের জন্মবার্ষিকী পালন
আনসার আহমেদ উল্লাহ
কন্ট্রিবিউটিং এডিটর, সত্যবাণী
লন্ডন: নব্বই র দশকের শুরুতে,রাজাকার ও ৭১ এর যুদ্ধপরাধীদের বিচারের দাবিতে গড়ে ওঠা সংগঠন একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রতিষ্ঠাতা আহব্বায়ক,মহিয়সী সংগ্রামী নারী শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯১ তম জন্মদিনে,প্রিয় নেত্রীর প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা,ভালবাসা ও আত্তার মাগফেরাত প্রার্থনা করে দিনটি উদযাপন করে ,সংগঠনের সুইজারল্যানড শাখা কমিটি ।
গত রোববার ৩রা মে,জেনেভাস্হ স্হানীয় একটি বাংগালী রেস্টুরেন্টের বল রুমে , সুইস সরকারের স্বাস্হ্যবিধি মেনে, নিরাপদ সামাজিক দুরুত্ব রক্ষা করে ক্ষুদ্র পরিসরে , এই অকুতোভয় মহীয়সী নারীর কর্মময় জীবন ও দর্শন নিয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয় । সুইজারল্যান্ড একাত্তর ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সাধারন সম্পাদক পলাশ বড়ুয়ার উপস্হাপনায় আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি রহমান খলিলুর মামুন।আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন সুইজারল্যান্ড আওয়ামীলীগের সিনিয়র নেতা জমাদার নজরুল ইসলাম,সুইস আওমীলীগের সহসভাপতি মশিউর রহমান সুমন ,সহসভাপতি অরুন বড়ুয়া ও পলাশ বড়ুয়া।সিনিয়র নেতৃবন্দ প্রিয় নেত্রীর কর্মময় জীবন নিয়ে আলোচনায় বলেন,আজ শহীদ জননী জাহানারা ইমামের ৯২তম জন্মদিন ও ৯১তম জন্মবার্ষিকী। অবিভক্ত বাংলার মুর্শিদাবাদ জেলার সুন্দরপুর গ্রামে ১৯২৯ সালের ৩ মে জাহানারা ইমামের জন্ম গ্রহন করেন । বাবা আবদুল আলী ছিলেন ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। পারিবারিক অনুকূল পরিবেশের সুবাদে জাহানারা রক্ষণশীল নারী সমাজ থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। বিয়ের পর প্রকৌশলী স্বামী শরীফ ইমামও তাকে এ ব্যাপারে যথেষ্ট অনুপ্ররণা যুগিয়েছেন। কলকাতার লেডি ব্রেবোর্ন থেকে বি.এ পাস করে পরবর্তীকালে প্রাইভেটে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় এম.এ করেন জাহানারা ইমাম। কর্মজীবনে তিনি সিদ্ধেশ্বরী গার্লস স্কুল ও ঢাকা টিচারর্স ট্রেনিং কলেজে শিক্ষকতা করেছেন। সত্তরের দশকের শেষ দিকে শিক্ষকতা ছেড়ে প্রগতিশীল সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েন। একাত্তরে তার ছেলে শাফী ইমাম রুমী দেশের মুক্তিসংগ্রামে অংশ নেন, কয়েকটি সফল গেরিলা অপারেশনের পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন ও পরবর্তীতে নির্মমভাবে শহীদ হন। বক্তারা বলেন রুমীর শহীদ হওয়ার সূত্রেই জাহানারা ইমাম শহীদ জননীর মযার্দায় ভূষিত হন।
মুক্তিযোদ্ধার গর্বিত মা, বিশিষ্ট সাহিত্যিক ও সংগঠক এই মহীয়সী নারীর নেতৃত্বেই গত শতকের নব্বইয়ের দশকে গড়ে ওঠে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন। একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির ব্যানারে করা সেই আন্দোলন পেয়েছে চূড়ান্ত পরিণতি। চলছে মানবতাবিরোধী হিসেবে আখ্যায়িত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ। ইতোমধ্যে এই ঘৃণ্য অপরাধীদের অনেকেরই ফাঁসির দন্ড কার্যকর হয়েছে। দেশে ও আন্তজাতিক অংগনে এ আন্দোলন চলমান থাকবে । লুসার্ণ থেকে টেলিফোনে যোগ দেন , অন লাইন এক্টিভিস্ট অমিয় রহমান পিয়াল।তিনি তার বক্ত্যবে বলেন ৯২তে তিনি যখন একাত্তরের ঘাতক দালালদের বিচারের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দিলেন, আর শুধু শহীদ মুক্তিযোদ্ধা রুমীর মা থাকেননি, লাখ লাখ তরুণের ‘আম্মা’ হয়ে গিয়েছিলেন। উত্তর প্রজন্মে এসেছে শাহবাগে গণজাগরন- শাস্তি পেয়েছে গোলাম আজম, ফাঁসিতে ঝুলেছে ঘাতক যুদ্ধাপরাধীরা। তিনি দেখে যেতে পারেননি, কিন্তু তার জ্বেলে দেওয়া আগুনে আজো ঋদ্ধ তার সন্তানেরা- মৌলবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে, প্রতিরোধে ও সংগ্রামে। শুভ জন্মদিন আম্মা ।
করোনা সংক্রমণের ঝুকিতে সক্রিয় অংশ গ্রহন করতে পারেন নাই , তবুও আদর্শের টানে অনলাইনে সভায় যোগ দিয়ে , সহমত ও শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন সুইস শাখা নির্মূল কমিটির উপদেষ্টা সর্ব জনাব মিয়া আবুল কালাম , শাহীন মজুমদার , ও হাসান ইমাম খান , সুইজারল্যান্ড আওয়ামীলীগের উপদেষ্টা ইমরান খান মুরাদ , যুগ্ন সম্পাদক মাসুম খান দুলাল , সুইস আওয়ামীলীগ নেতা মোর্শেদ গোলাম , মোহাম্মদ ইকবাল , জেনেভাস্হ হারুনুর রশীদ,কাজী রহিম , রজত কান্তি ও সাবেক সভাপতি হারুনুর রশীদ বেপীরী , লুজান থেকে সুইজারল্যান্ড বংগবন্ধু পরিষদ সভাপতি জসীম উদ্দীন ভুইয়া , আনিস হোসেন ও বার্ণ থেকে সাবেক সাধারন সম্পাদক মিয়া সাব্বির রনি ।আলোচনা সভায় উপস্হিত অনান্যদের মধ্যে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন প্রবাসী কমিউনিটি নেতা সুমন চাক্ মা , সুনীল চক্রবর্তী,তপু বড়ুয়া ও সুইস নির্মূল কমিটির সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক সাজিয়া সুলতানা।সভার সমাপনী বক্ত্যবে রহমান খলিলুর মামুন বলেন আমরা কেন্দ্রিয় সংগঠনের নেতৃত্ব , মৌলিক নীতি ,আদর্শ ও কর্মসুচীর!