শিকড় হারানো অমল চন্দ্র চৌধুরী তাঁর স্কুল ও হারানো জন্মভিটের ছবি দেখতে চান
নিউজ ডেস্ক
সত্যবাণী
লন্ডন: পঁচাশির্ধো বয়োবৃদ্ধ অমল চন্দ্র চৌধুরী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগণার দত্তপুকুর গঙ্গাপাড়ার অবসরপ্রাপ্ত স্কুলশিক্ষক। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জ সদরের ঘাঘর নদীতীরে মদনপাড়ায় পৈতৃকভিটেয় জন্ম তাঁর। ৭০এর ডিসেম্বরে ৩৩বছর বয়সে বর্তমান বাংলাদেশের সরকারি-স্কুলশিক্ষক অমলবাবু পাক হানাদারদের তাড়ায় প্রাণ বাঁচাতে নিজ ভিটে ছেড়ে পশ্চিমবঙ্গে সপরিবারে চলে যান। পরে সে ভিটে দখলের খবর পেয়ে আর ফিরে আসেননি নিজ জন্মমাটিতে।
কিন্তু এই মানুষটির জীবনে আছে আরেকটি গল্প।
মুক্তিযুদ্ধের বীরসেনা অনেকেই হয়তো আজও বেঁচে আছেন, কিন্তু ক’জন ভাষাসৈনিক আজ বেঁচে আছেন বলা মুস্কিল। তবে এই ভাষাসৈনিক আজও সতেজ স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন এই আশায় যে, সীমান্তের কাঁটাতার মুছে দুইবাংলা আবার এক হবে, দেশভাগ নামক ভুলের প্রায়শ্চিত্ত হবে।
গোপালগঞ্জের কোটালি পাড়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউটে ক্লাস সিক্সে পড়াকালীন ‘৫২এর ভাষা আন্দোলন সংগঠনের কারণে প্রথম জেলখাটা, তারপরও ৬৯ পর্যন্ত বেশ কয়েকবছর ধরে ভাষা-আন্দোলন-বার্ষিকীর দিনগুলিতে পাকিস্থানি পুলিশের দ্বারা প্রিভেন্টিভ অ্যাক্টে গ্রেপ্তার হয়ে বারেবারে জেলে গেছেন এই মানুষটি। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে একবার দেখা হয়েছিল তাঁর। বঙ্গবন্ধুর হস্তরেখা দেখে ‘রাজা’ হওয়ার ভবিষ্যদ্বাণী করে বাহবা পেয়েছিলেন।স্বাধীনতার প্রাকমুহূর্তে দেশত্যাগ করেন, এজন্য আজও একবুক আফশোস তাঁর।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এম.এ,বি.এড. অমলবাবু পরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও ডবল এম.এ করেন। দেশত্যাগের সময় তিনি ছিলেন নিজের ছোটবেলার স্কুল কোটালিপাড়া ইউনিয়ন ইন্সটিটিউটেরই ভাষাবিভাগের শিক্ষক।এখন তাঁর স্কুল ও হারানো ভিটের ছবি যদি মেলে, তাতেই খুশী হবেন তিনি।
লেখা: রাজকুমার পাল, খড়দহ, উত্তর চব্বিশ পরগণা, ভারত।
(ফেইসবুকের সৌজন্যে)