মরার উপরে খাঁড়ার ঘা!
সুমন দেব নাথ
ই-কমার্সে লেনদেন করলে থার্ড-পার্টি কারো কাছে সেই টাকা জমা থাকে যা কাষ্টমার কনফার্ম করলে ঐ টাকা ই-কমার্স কোম্পানির একাউন্টে জমা হয়। (ই-ভ্যালির রাসেল ভাইয়েরা যেমন গ্রাহকদের সব টাকা নিজেদের একাউন্টে নিয়ে নিছে) এই অবস্থা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দেয় পেমেন্ট গেটওয়েতে টাকা জমা রাখতে।
তো এই কাজ করার জন্য বাজারের আসে “ফস্টার” নামক এক পেমেন্ট গেটওয়ে প্রতিষ্ঠান। যা ২০১৬ সালে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে NOC নিয়ে তাদের ব্যবসায়িক কার্যক্রম শুরু করে। তবে শর্তছিলো তারা যেন বৈধ অনুমোদন নিয়ে নেয়।
এবার বলুন দেখি, যাদের বৈধ অনুমোদনই নাই তাদের কিভাবে বাংলাদেশ ব্যাংক NOC (নন অবজেক্টশন সার্টিফিকেট) দিয়ে দিলো? সুতরাং বাংলাদেশ ব্যাংকই “ফস্টার” কে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দেয়!
ধরেন আপনি বিশ্ব বিদ্যালয়ের ছাত্র; এবার বলুন তো বিশ্বের কোন বিশ্ববিদ্যালয় কি আপনাকে এই মর্মে সার্টিফিকেট প্রধান করবে যে আপনি ২০২৫ সালে আপনার ডিগ্রী কম্প্লিট করবেন! এবং এই সার্টিফিকেট দিয়ে আপনি কোন জবে এপ্লাই করতে পারবেন? কোথাও জব করতে পাবেন?
দেশে পেমেন্ট গেটওয়ের চুড়ান্ত অনুমোদন কে দেয়? হ্যাঁ, বাংলাদেশ ব্যাংকই দেয়। তাহলে NOC ইস্যু করার ৫ বছর পার হওয়ার পরেও কেন তারা অনুমোদন নেয়নি? এইসব বিষয় দেখভালের দায়িত্ব কার? হ্যাঁ, বাংলাদেশ ব্যাংকেরই। এই যে এখন পেমেন্ট গেটওয়ে ফস্টারে বিভিন্ন মার্চেন্টদের ৪২০ কোটি টাকা আটকে আছে? এবং অভিযোগও উঠেছে তারা তাদের টাকা বিদেশেও পাচার করে ফেলেছে!
ফস্টারের অবৈধ কার্যক্রমকে বৈধ ভাবে পরিচালনা করার যে অনুমোদন বাংলাদেশ ব্যাংক দিয়েছে এর দায় কি বাংলাদেশ ব্যাংক এড়াতে পারবে?
এখন মার্চেন্টদের উচিত ফস্টারের নামে নয়, স্বয়ং বাংলাদেশ ব্যাংকের নামে দেশের সর্বোচ্চ আদালতে মামলা ঠুকে দেয়া। তারপরেই কর্তাদের গায়ে কোর্টের ডলা লাগলেই বের হয়ে আসবে কোন কর্মকর্তা কত টাকা নিজের পকেটে ঢুকিয়ে ফস্টারকে তাদের কার্যক্রম করার অনুমোদন দিয়েছে।
সুতরাং বাংলাদেশ ব্যাংক মার্চেন্টদের ৪২০ কোটি টাকা ফেরত দিক আর ফস্টারের অবৈধ কার্যক্রম ও মানিলন্ডারিং এর বিচার হোক।
লেখকঃ ইংল্যান্ড প্রবাসী সাংবাদিক ও অনলাইন এক্টিভিষ্ট।