মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিকথা-৪

 সুবল চন্দ্র পাল

 

সুবল চন্দ্র পাল। ৭১ এর রনাঙ্গন কাঁপানো একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা, ছিলেন পাকিস্তানী হানাদারদের আতঙ্ক। ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তানী হানাদারদের আত্মসমর্থনের কদিন আগেই মুক্তিযোদ্ধাদের যে গ্রুপটি সিলেটের জালালপুর মুক্ত ঘোষণা করে লাল সবুজ পতাকা উড়িয়ে ছিলেন, সেই গ্রুপেরই অন্যতম সদস্য ছিলেন তিনি। স্বাধীনতার পর অস্ত্র জমা দিয়ে সদ্য স্বাধীন দেশটি পুনর্গঠনে মনোনিবেশ করেন বীর এই মুক্তিযোদ্ধা। প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠন ন্যাপের নেতা হিসেবে ঝাপিয়ে পড়েন মানব উন্নয়নের কাজে। নিজ এলাকা জালালপুরে বৈরাগীর বাজারে প্রতিষ্ঠা করেন হাই স্কুল এবং এই স্কুলের অবৈতনিক প্রধান শিক্ষক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন। জনগণের চাঁদায় বড়ভাঙ্গা নদীতে নির্মাণ করেন একটি সেতু। সেতুটির উদ্বোধন করেছিলেন প্রয়াত জননেতা পীর হবিবুর রহমান। মানবপ্রেমিক এই মানুষটির বিশাল হৃদয়টি ভরে আছে মানুষের জন্য ভালোবাসায়।এই ভালোবাসার ভার বহন করতে গিয়েই হয়তো সম্প্রতি বিগড়ে গিয়েছিলো তার এই হৃদয়। হয়েছিলেন হৃদরোগে আক্রান্ত। অপেন হার্ট সার্জারির পর সম্প্রতি ফিরেছেন নিজ বাড়ীতে। সত্যবাণী সম্পাদকসহ তাঁর এক সময়ের রাজনৈতিক অনুসারীদের একটি গ্রুপ তাঁকে দেখতে  গিয়েছিলেন তাঁর গ্রামের বাড়ীতে। অসুস্থতা ভুলে তাদের সাথে প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছিলেন তিনি। সাম্প্রতিক ভাবনা, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের স্মৃতি অনেক কিছুই শেয়ার করেন তিনি এসময় তাদের সাথে। এ বিষয়ে  কাগজে লিপিবদ্ধ তার লিখাটি নিয়ে আসে সত্যবাণী। পাঁচ পর্বে বিভক্ত এই লেখার ৪র্থ পর্বটি আজ তুলে ধরা হলো পাঠকদের জন্য।-সম্পাদক

৪র্থ অংশ 

অক্টোবর ১৯৭১,  আমরা অগ্রবাহিনী বর্ডার অঞ্চল থেকে প্রায় ৬০মাইল ভিতরে চলে এসেছি প্রথম জালালপুরে যে বাড়িতে কচু ইছামাছ দিয়ে খেলাম তাহা মনে হলমাঅমৃতের অমৃত আমাদের মায়েরা যে এত ভাল  করে রাধতে পারে রমযানের দিন রাত থেকে কোন কিছু না খেয়ে যদি পরের রাতে চারটি ভাত খাওয়া যায়তাইতো স্বাদের  খাবার এক ডেগ ভাতের মধ্যে সেই সময়ে / টি পুটির সিদল আধা পোড়া করে ছেড়ে দিলে একটু নেড়ে ছেড়ে  ৪০জন মানুষে যদি একবার হাত ঢুকায়মাতবে ৪১ নম্বর এর সময় একদানা ভাতও আর দেগে পাওয়া যাবেনা এইতো ছিল খাওয়ার নমুনামা পানিই প্রধান খাদ্যমা একঝাপটা ভাত  আর এক জগ পানি হলে আরকি লাগে

চল চকের বাজার ফজলুর রহমান রাজাকারের বাড়ি যেতে হবে এককথায় খাড়া, তর্ক নেই কোন কথাও নেই, রওয়ানা। জালালপুর থেকে সিলেটের পাক বাহিনীকে ভীষনভাবে জ্বালিয়েছি আমরা সিলেটের পাক বাহিনীর কমান্ডার  সরফরাজ খান বলত–  ‘জালালপুর ২য় ইন্ডিয়া হায় এদের মাটি চাই সাপের  বাচ্চা সাপই হয় পাক হানাদার বাহিনীর লোকদের মধ্য থেকে কোন মানবিক বক্তব্য  আমার কানে আসে নাই মাটি নহে, মানুষ চাই এই ছোট কথাটি কেউ বলতে শুনি নাই ওরাই গাদ্দারওরাই বর্বর আমাদের এক   অনুচর সিলেট সার্কিট হাউজে ছোট চাকরি করত বোধ হয় পদটি তাঁর স্থায়ী ছিল। সার্কিট হাউজে ১৯৭১  সালের যুদ্ধকালীন সময়ে সিলেটের প্রধান সামরিক কর্মকর্তার অফিস ছিল  এই অফিসে জালালপুরের বিষয়ে কোন আলাপ হলেই ওই কর্মচারিটি নানান ছলে একটু কাছাকাছি এসে সকল কথা শুনার একটু চেষ্ঠা করত সে যাহা শুনত তাহা আমাদের মেইন পাইপে দিবার জন্য অফিস ছুটির পর চলে যেত সিলেট ডাকঘরে জালালপুরের একজন কর্মকর্তার নিকট পদ্ধতি এই রকম ছিল

সার্কিট হাউজসিলেট–  প্রধান ডাকঘরসিলেট–  ইষ্টার্ন সার্কেল টহল

এইভাবে ছোটখাটো নিরাপত্তা পাইপ লাইন প্রায় তিন মাস পর্যন্ত কার্যকর ছিল যেদিন সার্কিট হাউজ সিদ্ধান্ত নিল যেতারা জালালপুরের মাটি চায়, মানুষ নয়, সেই দিনই আমারা রায় খাইলের জমশেদ আলীর বাড়ি ত্যাগ  করে মোগলাবাজার ইউনিয়নের তিরাশী গ্রামে চলে যাই এইভাবে অশিক্ষিত, অপ্রশিক্ষিত মানব গোয়েন্দারা মুক্তিযুদ্ধ সফলভাবে চালিয়েছে এবং সফলতা নিয়ে এসেছেসিলেটের যুদ্ধবাজরা সিলেট অঞ্চলের চারদিক  থেকে রাজাকারদের ঢল নামাতে চেয়েছিল শেষ গনহত্যা চালাতে বদ্ধপরিকর ছিল কিন্তু বিধি বাম মানুষ ভাবে এক আর ফল হয় তাঁর বিপরীত পাকহানাদার বাহিনী যখন জানতে পারল ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশ সীমান্তে পূর্ন সেনাবাহিনী নিয়োজিত করেছে নৌবিমান শক্তিসহ সকল প্রকার শক্তি একত্রিত করেছে তখন  হার্মাদ বাহিনীর প্রান কেঁপে ওঠলো আর জালালপুরের মাটি শাহজালালের ঘাটি ছিল ভারত ডিসেম্বর  বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দান করে জালালপুরে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলিত হয় এই আনুষ্ঠানিক পতাকা উত্তোলন হওয়ার সাথে সাথে বিশ্বনাথবালাগঞ্জফেঞ্চুগঞ্জ গোলাপগঞ্জ মুক্ত হয়ে যায়/১০ তারিখ বিশ্বনাথ থানার সকল পুলিশ সদস্য তাহাদের সকল অস্ত্র জালালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পে সমর্পন করে।

১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পরিপূর্ন বিজয় অর্জন করে জে.নিয়াজীর আত্নসমর্পনের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধারা যত  শীঘ্র সম্ভব সম্ভবত ২০ডিসেম্বর আমরা জালালপুর থেকে টি বাস জোগাড় করে সংগৃহীত সকল অস্ত্র বোঝাই করে তখনকার জামেয়া স্কুলে মেজর জেনারেল সি.আর. দত্তের  কাছে  জমা দান করি তখন  সি.আর. দত্ত স্যার আমাদের সকলকে  বাড়ি চলে যেতে বলেন যে যে কাজে স্বাধীনতা যুদ্ধের পূর্বে লিপ্ত ছিলেন তাতে যোগদানের নির্দেশ প্রদান করেন নং সেক্টরের কমান্ডার সি.আর. দত্ত, মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি এম..জি. ওসমানী, পীর হবিবুর রহমানবরুন রায়, দেওয়ান ফরিদ গাজী  সকলের পরামর্শক্রমে আমরা অস্ত্র জমা দেই  আর আমাদেরকে ফিরে যেতে হয়নি কেউ কেউ শিক্ষকতায় বিদ্যালয়ে পাঠদানে নিয়োজিত হন

আমার মনে আছে স্বাধীনতার অল্প কিছুদিনের মধ্যেই প্রতি বিল্পবিরা একত্রিত হতে থাকে তারা সুযোগ পেয়েই ১৫ই আগস্ট ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যাসহ দেশে তান্ডব চালায় কুলাউড়ার জব্বার ভাইসহ আরো অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে

আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা হিসাবে স্বাধীনতার পূর্বেই শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলাম ১৬ই ডিসেম্বর এর পর আবার সেই শিক্ষকতায় যোগদান করি কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আমরা শান্তিতে থাকতে পারি নাই বাড়িতে থাকতে পারি নাই স্কুলের শিক্ষকতা ছেড়ে দিতে হয়। কারন আর্মি ইন্টেলিজেন্স বলে কুলাঙ্গার সৈনিক একজন মুক্তিযোদ্ধাকে নির্যাতন করার লক্ষ্যে বাড়িতে ঢুকে আমাকে না পেয়ে আমার মায়ের গায়ে আঘাত করেছে আমি আমার মায়ের নির্যাতনের বিচার চাই আমরা দুইভাই মুক্তিযোদ্ধা। আমাদের বীর মাতাকে আঘাতের কারনে আমরা মর্মে মরিয়া আছি বয়স্ক ভাতাবিধবাভাতা,পঙ্গু ভাতামুক্তিযোদ্ধা ভাতাপ্রতিবন্ধি ভাতাহিজড়াভাতাদূরারোগ্য ভাতাসারভর্তুকীশিক্ষার্থীদের পুস্তক বিতরনী ভাতা, ১০ টাকার চাল বিতরনী ভাতা, শহিদ ভাতা, পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তিসহ অনেক সহযোগীতামূলক কার্যক্রম সরকার চালিয়ে যাচ্ছে এই সকল ভাতা কার্যক্রম বা সহযোগীতা কার্যক্রমের জন্য তো সরকারকে চাপ দিতে হয় নাই কোন মিছিল মিটিং করতে হয় নাই মুক্তিযোদ্ধারা ট্রেনে যাতায়াতের সময় ট্রেনে একটি কমিশন পেয়ে থাকে, তাহাতো কোন আন্দোলনের ফসল নয় অনেক বড় বড় প্রকল্প চলছে, চলবে সেগুলোর  জন্য কোন আন্দোলন করতে আমরা শুনি নাই পদ্মা সেতু প্রকল্প, মেট্ররেল প্রকল্প, রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুত প্রকল্প, কুর্নফুলি টানেল প্রকল্প, বিভিন্ন রাস্তায় /লেন প্রকল্প, পার্শ্ববর্তী দেশের সাথে সংযোগ সড়ক প্রকল্প, ভুটান, নেপাল ভারতের সাথে সংযোগ সড়ক প্রকল্প সফল বাস্তবায়নের সাথে এগোচ্ছে এই সকল প্রকল্প যাতে বাস্তবায়ন না হতে পারে তাঁর জন্য বিভিন্ন অজুহাত দাড় করিয়ে এমন এমন নেতৃবৃন্দ জাতীয় প্রচার মাধ্যমে আঙুল উচিয়ে বক্তব্য রেখেছেন। তাহারাতো একবার প্রচার মাধ্যমে এসে বলতে শুনা গেল না যে, আমারা হয়ত বুঝের ভুলে বলে ফেলেছি বা শত্রুর প্ররোচনায় বলে ফেলেছিক্ষমা নাইক্ষমা নাই তোদেরতারা কি কোন বক্তব্যই ভুল বলেন নাই বেশ বেশ

একজন ইঞ্জিনিয়ার আছেন যিনি টেবিল টকে এসে যে রকম উচ্চ বাচ্য করেছেন, ব্যাপার ছিল CNG ড্রাইভারদের আন্দোলন তাদের ভাষ্যমতে এবং এত উচ্চস্বরে হাত উঠিয়ে বাংলার বীর জনতাকে ভয় দেখিয়ে নিজের মত করে CNG সংখ্যাতাদের ড্রাইভার সংখ্যা, তাদের সহকারীদের সংখ্যা, তাদের পরিবারের  সদস্য সংখ্যা, তাদের নির্ভরশীল সংখ্যা বাহির করে এমন এক চিত্র তারা তুলে ধরতে পারেন যাতে বাংলাদেশের ৩০ লক্ষ শহিদের রক্তদান বৃথা করে একটি অরাজক সরকার না গঠন হয়ে যায়  ড্রাইভাররা বড় বড় বাসগাড়ীসহ অন্যান্য গাড়ী  ভাংচুর বা আগুন লাগিয়ে তাদের হড়তাল কর্মসূচী সফল করার অপচেষ্টা করছেন  কিন্তু এইসব বাক্তিরা একবারও গলা উচিয়ে বললেন না এই দেশ ৩০ লক্ষ শহিদের দেশ, এই রাস্তা ঘাট জনগনের জমিতেশিল্প, ব্রিজ সহ যত প্রয়োজনীয় কার্যক্রম করতে হয় তাতো স্বাধীনতাকামি জনগনের সরকার করছে করবে সর্বোপরি এদেশের মালিক (তোমরা CNG সহ) তাদেরকে বিপদে ফেলা তোমাদের কোনক্রমেই ঠিক নয় বক্তৃতার ভাষায় কি আরো শতাধিক কন্ঠের কথা উচ্চারণ করা যায় না ওরা হাসপাতালে যাওয়ার পথে মারা যাবে, শিক্ষার্থীরা (তোমাদের মেয়েবোন) সহ তাদেরকে বিদ্যালয়ে পরীক্ষায় যেতে হবে তোমাদের এই কার্যক্রমে জাতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এই সকল কথাগুলো এই সাবেক ইঞ্জিনিয়ার বক্তা পন্ডিতরা বলতে চান না না, বলার প্রয়োজন মনে করেন না না জনগনের বিপক্ষে বলা তাদের অভ্যাসনিজের পান্ডিত্য জাহির করা, জনগনকে উস্কিয়ে দিয়ে ফলাফল পরিনতির দিকে খেয়াল না করে যা ইচ্ছে তা বক্তব্য উপস্থাপন করা কোন ক্রমেই তাঁর উচিত নয় সকল বক্তব্য লিখিত পেশ করা উচিত। নীচে ছোট সই দিয়ে উপস্থাপন করুন তাহলে অনেক বক্তব্য নিয়ন্ত্রিত হবে বলে আমার বিশ্বাস এই ব্যাপারে আর কিছুই বলতে চাইনা আক্কল বন্ধুকে নিয়ে ইশারা কাফি হায়বললেই বলা নয় না বললেও বলা হয় জনগন শুনেছে কিন্তু বলে নাই রুপপুর পারমানবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের জন্য যারা অলিখিত বক্তব্য পেশ করেছেনতাদেরকে বলি আপনারা লিখিত বক্তব্য দাড় করান জনগনের জন্য আপনারাই তো আমাদের চোখনাক, কান আজ বর্তমান সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে জনগন পঞ্চমুখ যাহারা বলেছিল ডিজিটাল ডিজিটাল,তাদের মুখ চুপশে গেছে একদিন সকলে মিলে হাসতে পারলে যে অনেক রোগ বুঝি চলে যায় কিন্তু এই মানসিকতা কবে আসবে তাহাই আমরা কামনা করছি একত্রে অট্টহাসির চেয়ে,   ব্যঙ্গ হাসির চেয়ে একটি বিজয়ের হাসি আছে তাঁর অপেক্ষায় সকলে থাকা উচিত আমি অজ পাড়াগায়ের একজন কৃষক মুক্তিযোদ্ধা সারা জীবনের একজন গর্বিত শিক্ষক বটে আমারা ৮ম/৯ম শ্রেনী থেকে একটু  একটু ইতিহাস পড়া শুরু করেছিলাম সেই ইতিহাস পড়ার অনেক তথ্য মনের পর্দা থেকে সরে গেছে কিছু কিছু যাহা স্মরনে আছে তাঁর মধ্যেসায়েস্থা খানের সময় নাকি গ্রামের কৃষককুল খুব সুখে ছিল

টাকায় নাকি আট মন ধান পাওয়া যেত সেসময় টাকাও কম মূল্যবান ছিলনা আজ বাংলার কৃষকের মুখে সেই হাসির চিত্র পাই কথা ছিল গ্রামের মানুষ তখনই সুখি যখন তাদেরপুকুর ভরা মাছ থাকে, গোলা ভরা ধান থাকে আর ঘরে বৃষ্ঠির মত লক্ষীমন্ত বউ থাকে আজ এই কথাগুলোর ক্ষীন ইংগিত আমরা দেখতে পাই

গ্রামের চিত্র নিম্নরুপঃ

. পুকুর ভরা মাছ(ফিশারী)- কেহ বিষ ছাড়েনা, চুরি করেনা, টং বেঁধে পাহারা দিতে হয়না মৎস সম্পদে বাংলাদেশ নাকি নম্বরে অবস্থান করছে

. মাঠের ধানঃ পাকিস্তান আমল থেকে এখন প্রতি একক জমিতে গুন ধানের ফলন বেড়েছে ফলন ভাড়ারে তুলতে প্রায় / গুন পরিশ্রম সাশ্রয় হয়েছে আমনআউশ বা বুরো যেকোন ধান তাঁর কাটার মৌসুমে গাড়ি দিয়ে বাড়িতে এনে মাড়াই মেশিন দিয়ে ফসল মাড়াই করে হাজার হাজার টাকার ধান অরক্ষিত অবস্থায়  উঠানে ফেলে রাখেন পরের দিন ঝাড়াই শুকানোর কাজ করা হয় পূর্বে তা ছিল অকল্পনীয়

.চুরির ভয় গরুর জন্যঃ আগের দিনে মানুষ চুরির ভয়ে শাখসবজি ফলাতো না আর যারা ফলাতো  তাহারা পাহারা দিত এই জন্য সীমিত আকারে সবজি ফলাতো চুরির ভয়ে, তাঁর সাথে আরেকটি ভয় ছিলগরু  ছাগলের ভয় লোকজন অবাধে শীতকালে,অগ্রহায়নের পরে পরেই গরু ছেড়ে দিত যে কৃষক এক মাস মাটি তৈরি  করে ,সার দেওয়া, পানি সেচ দেওয়া সহ পোকা দমনের ঔষধ দিয়ে ফসলকে ফলানো করেছেন এমন একদিন একটি ষাঢ় বেড়া ভেঙ্গে সমস্থ সবজি নষ্ঠ করে এক লাফে বেড়া পার হয়ে চলে যেত। এই ঘঠনাকে কেন্দ্র করে দুই পরিবারে মারামারি এমনকি  দুই গ্রামের মধ্যে হাজের ঝগড়া শুরু হত এতে দুচারজন লোক জখম কিংবা মারাও পড়ত এই বিপদজ্জনক শাখসবজি এখন মাঠে মাঠে জলমল করছে  শুনা যায় শাকসবজি উৎপাদনে বাংলাদেশ নাকি নম্বরে অবস্থানে করছে এখনকি এই ভুখানাঙ্গা মানুষের আনন্দে কিএকবার সকলে মিলে হাসতে পারিনা যে দেশের মানুষের একটি চাদর ছিল না ,একটা সুয়েটার ছিলনা, এক জোড়া মোজা ছিল না, এক জোড়া পায়ের চপ্পল ছিল না, একবেলা খাওয়ার পর আরেক বেলা খাবার থাকত না, তাদের আলনা আজ কাপড়ের ভারে ভেঙ্গে পরছে। বাজার থেকে বস্তা বস্তা চাল ঘরে নিয়ে আসছে তাতে কি একবার আনন্দে হাসতে ইচ্ছে করেনা বলনা দেশবাসী বল আপনাদের সুখের জন্যইতো ৩০ লক্ষ প্রান  আত্নবলিদান করেছে আজকে গ্রামে গ্রামে স্টেশন করে ৬টি মারাত্নক রোগের টিকা প্রদান করা  হয় কোনটি হামের টিকাকোনটি হুপিং কাশির টিকা আবার কোনটি অন্য রোগের টিকা নিয়মিত প্রদান করা  হয় যার ফলে শিশু মৃত্যু হারের দিকে আমরা বিশ্ব রেকর্ড স্থাপন করেছি এখন রাস্তাঘাটে ৯ম/১০ম শ্রেনীর শিক্ষার্থীর বেশ লম্বা চওড়া লাইন দেখতে পাওয়া যায় আমরা সকলে কি একবার আনন্দে অট্টহাসি দিতে পারিনা

আমাদের  সুকন্যারা লেখাপড়া করে উপবৃত্তি পেয়ে সে তাঁর চিকিৎসার জন্য ৩০০/- টাকা বাবার হাতে তুলে দেয় তখন কি বাবার চোখ দিয়ে এক ফুটো নোনা পানি গাল দিয়ে গড়িয়ে পড়বে না তাইত মেয়ে যখন বাবার গলায় ধরে বাবা বাবা বলে পকেট থেকে সিগারেটের প্যাকেট বাহির করে বলে স্যার বলেছেনসিগারেট খেলে  মানুষের মৃত্যু হয়। এবং ক্যান্সার হয় যা হলে মানুষ বাচে না বাবা তুমি না থাকলে আমরা কি খাব, কাকে বাবা বলে ডাকব আমি এই সিগারেট ভেঙ্গে দিলাম এবং পুকুরে ফেলে দিলাম বাবা মেয়েকে আর কি করবেনছেলে হলে না হয় দুই গালে দুই থাপ্পড় মেরে সিগারেট ভাঙ্গার জন্য ধমক দিতেন মেয়েরা আদর করে সিগারেট ভেঙ্গে দিলে পিতার আর কিছুই করার থাকে না এইভাবে বাংলাদেশে ধূমপায়ীদের সংখ্যা কমছে বলে আমার বিশ্বাস। (চলবে)

সুবল চন্দ্র পাল: বীর মুক্তিযোদ্ধা, রাজনীতিবিদ।সিলেট জেলা ঐক্য ন্যাপের সভাপতি।

You might also like