রাজনৈতিক কুমতলবে ধর্ম যখন দানব হয়ে উঠে
রুহুল কুদ্দুস বাবুল
“আল্লাহকে ছেড়ে যাদেরকে তারা ডাকে তাদেরকে তোমরা গালি দিও না। কেননা তারা সীমালঙ্ঘন করে অজ্ঞানতাবশত আল্লাহকেও গালি দিবে। এভাবে আমি প্রত্যেক জাতির দৃষ্টিতে তাদের কার্যকলাপ সুশোভন করেছি; অতঃপর তাদের প্রতিপালকের নিকট তাদের প্রত্যাবর্তন। অনন্তর তিনি তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করবেন।” (সুরা আনআম: ১০৮)।
রাসুল মহানবী মোহাম্মদ (সা.)-এর বিরুদ্ধে কাফেররা যেসব আজে বাজে কথা বলত এর পরিপ্রেক্ষিতে আল্লাহ আদেশ দিয়ে বলেছেন- “লোকে যা বলে, তাতে তুমি ধৈর্য ধারণ কর এবং সৌজন্য সহকারে এগুলোকে পরিহার কর।”(সুরা মুযাম্মেল, আয়াত ১০)
ভারতে উগ্র সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল বিজেপি ক্ষমতায়। ধর্মীয় উস্কানি দিয়ে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় তারা। অযোধ্যায় প্রাচীন মসজিদের স্থলে রামমন্দির নির্মাণের দাবি নিয়ে বিজেপি আন্দোলনে নামার সিদ্ধান্ত নেয় হিমাচল প্রদেশের পালানপুর অধিবেশনে, ১৯৮৯ সালে। বিজেপির উত্থানই মন্দির আন্দোলনকে হাতিয়ার করে। যে বিজেপি একসময় লোকসভায় দুইটি আসন পেয়েছিল, মন্দির আন্দোলনের পর ৮৯টি আসনে জেতে। তার কিছুদিনের মধ্যে তারা ভারতের কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসে। ধর্ম যখন রাজনৈতিক হাতিয়ার হয় তখন তা হয়ে উঠে ভয়ংকর দানব।
এক ধর্মের মানুষ অন্য ধর্ম সম্পর্কে যখন সম্যকভাবে ওয়াকিবহাল থাকেন তাহলে পরস্পরের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি হয়না। এক পক্ষ যখন অন্য পক্ষের বিশ্বাস নিয়ে কৌতুক-তামাশা করে কিংবা ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ-উপহাস করে তখনই বিষয়টি আর সহনীয় থাকে না, আর সেটা স্বাবাভিক নয় উদ্দেশ্যমূলকই হয়। সেটা যদি কোন রাজনৈতিক নেতার মাধ্যমে হয় সেটা শুধু নিন্দনীয় নয় ভয়ংকর অপরাধ।
ভারতের দণ্ডবিধির বিভিন্ন ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ধর্ম, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ধর্মগুরু ও পয়গম্বরের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক ও অপমানজনক মন্তব্য করা যাবে না। বিজেপি নেত্রী নূপুর শর্মা ও নাভিন কুমার জিন্দাল রাসুল হযরত মুহম্মদ (সঃ) সম্পর্কে অমার্জিত মন্তব্য করে ঘৃণ্য অপরাধ করেছে।
উপরে পবিত্র কোরআনের দুটো আয়াত উদ্ধৃত করার উদ্দেশ্য আমরা ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা মহান আল্লাহর আদেশ শান্তির পথেই চলবো।
রুহুল কদ্দুস বাবুল: রাজনীতিক, সাবেক ছাত্রনেতা।