ইমাম মাহমুদ বিতর্ক একটি অশনি সংকেত
নবাব উদ্দিন
ইস্ট লণ্ডন মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ মাহমুদ কে নিয়ে এত বিতর্ক কেন? কেনই বা হৈ চৈ হবে একটি অপ্রয়োজনীয় ইস্যুকে এত বড় ইস্যুতে কেনই বা পরিণত করা হলো? ইমাম মাহমুদ তো ব্রিটিশ নাগরিক হিসেবে কোনো অন্যায় করেননি? বরং সঠিক দায়িত্বই পালন করেছেন।
ব্রিটিশ রাজত্বের রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুতে শোক জানানোর জন্য সেন্ট্রাল লন্ডনের রিজেন্টস পার্ক মসজিদে দাওয়াত প্রাপ্ত অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি চাকরির চুক্তিও লঙ্ঘন করেননি। তবুও তার বক্তব্যকে একটি বড় ইস্যু তৈরি করা হয়েছে? যারা এই পরিকল্পিত কাজটি করছেন, তাদের উদ্দেশ্য কী? এর উসকানীর মদদদাতা কারা? এই অপ্রয়োজনীয় ইস্যুটি বরং বিলেতের গোটা মুসলিমদের জন্যই বিরাটক্ষতি বয়ে নিয়ে আসতে পারে।তাই আমাদের এখনই নিদ্রা থেকে উঠে চোখ খুলতে হবে, এখনই উসকানি দাতাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় প্রতিবাদী পদক্ষেপ নিতে হবে।
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে কোথায় আমাদের প্রতিবাদী কমিউনিটি লিডাররা? কেন আপনারা আওয়াজ দিচ্ছেন না? মতলব কী? মৌনতা বা নীরবতার লক্ষণ তো আমাদের অশনিসংকেত দিচ্ছে। ইমাম মাহমুদ শুধু ইস্ট লন্ডন মসজিদের একজন জনপ্রিয় খতিব নন। তিনি বিলেতের অত্যন্ত সুপরিচিত, সুভাষী, উচ্চ শিক্ষিত ও জ্ঞানী ইসলামিক পন্ডিত। বেড়ে উঠেছেন বিলেতের হাওয়া-বাতাসে, এখানকার সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে যার রয়েছে প্রচুর অভিজ্ঞতা। ইসলামিক শিক্ষার পাশাপাশি উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হয়েছেন বিলেতের অন্যতম ইউনিভার্সিটি থেকে। যা অনেক ইমামের মধ্যে খুঁজে পাওয়া যাবে না। তিনি সর্বদা মুসলিম সম্প্রদায়কে বিলেতে ও বিশ্বের দরবারে উঁচু করে তুলে ধরেছেন। তার প্রতিনিধিত্ব প্রসংশিত করে আমাদের মুসলিম কমিউনিটিকে।
আমরা বিলেতে বহু সংস্কৃতি ও বহু বিশ্বাসী ধর্মের সমাজে বাস করি। তাই একজন মুসলিম নাগরিক হিসেবে আমাদের নৈতিক দায়িত্ব হলো অন্য ধর্ম, জাতি, বর্ণের সাথে মিলেমিশে এক হয়েকাজ করা এবং অন্যের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করা। স্বাভাবিক ভাবেই ইমাম মাহমুদ অন্য ধর্মের রানীর মৃত্যুতে শোক সভায় আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে সম্মান ও শোক প্রকাশ করেছেন এবং ইসলামের অনেকগুলো হাদিসও দিয়েছেন দাওয়া হিসেবে। অত্যন্ত দূর্ভাগ্যবশত, হাতেগোনা গোটা কয়েকজন সমস্যা সৃষ্টিকারী ইচ্ছাকৃতভাবে এই অহেতুক ইস্যুকে বড় ইস্যুতে পরিণত করতে যাচ্ছে। আর আমাদের কমিউনিটি নিরবে তা গিলে নিচ্ছে! আমি খুঁজে পাচ্ছিনা! এই ঘটনার মূল কারণ কী? উনি বাংলাদেশী নয় বলে তার পক্ষে কোন প্রতিবাদ বা আন্দোলন হচ্ছে না? অথবা তার জনপ্রিয়তা অন্যদের চেয়ে বেশি এবং অন্যরা এর জন্য ইর্ষান্বিত? এবং নীরব প্রতিহিংসা কাজ করছে। মূলকারণ যাই হউক না কেন, কোন ভাবেই বহুধর্মী এই সমাজে সংঘাত বা অসঙ্গতি সৃষ্টি কোনটাই কোন ভাবেই কাম্য নয়। যখনই আমরা আমাদের মধ্যে সংঘর্ষ, বিভেদ তৈরি করবো তখন সমগ্র মুসলিম কমিউনিটির জন্য বদনাম বয়ে নিয়ে আসবে। এবং উগ্রপন্থীরা এই বিভেদের সুযোগ নিবে।এমনিতেই আমরা বিলেতে নানা সমস্যায় জর্জরিত। এর মধ্যে বহু বছর বিলেতে বাস করেও ব্রিটিশ হওয়ার পর আমাদের বর্ণ ও রং আমাদের অনেক সমস্যার কারণ। এই বহু বাধার মধ্যে আমরা নিজেরা আবার আমাদের মধ্যে সমস্যা সৃষ্টি করে আমরা বিভক্ত হচ্ছি, আর উগ্রপন্থীদের আরোও সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছি ধর্মীয় বিদ্বেষের।
ইমাম মাহমুদকে আপাতত ইস্ট লন্ডন মসজিদে নামাজ পড়াতে পারবেন না বলে বলা হয়েছে, কারণ হচ্ছে তিনি রিজেন্ট পার্ক মসজিদে রানীর শোক সভায় বক্তৃতা দেন এবং যার মধ্যে কয়েক ডজন মুসলিম স্কুল ছাত্র ছিল, যারা ‘গড সেভ দ্যা কিং’ ব্রিটিশ জাতীয় সঙ্গীত গানটি গেয়েছিল এবং ইউনিয়ন জ্যাক নেড়েছিল। রানীর মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর ১৫ সেপ্টেম্বর রিজেন্টস পার্ক মসজিদের রানীর জন্য এক স্মরণ সভা অনুষ্ঠানে মাহমুদ মূল বক্তাদের একজন হওয়ার পর এবং বক্তব্যকে কেন্দ্র করে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আওয়ার টাওয়ার হ্যামলেটস নামক একটি কট্টরপন্থী হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ ইমাম মাহমুদের বক্তব্য এবং অনুষ্ঠানে উপস্থিতিকে নিন্দা জানিয়েছে এবং কেউ কেউ তাকে বরখাস্ত করার দাবি তুলেছেন। আমি যতদূর জানি, মসজিদ কমিটি ইমাম মাহমুদকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরখাস্ত করেননি, তবে তাকে আক্রমন করা হতে পারে এমন উদ্বেগের মধ্যে মসজিদে প্রতিদিনের নামাজের ইমামতি না করার জন্য বলা হয়েছে। আমার মনে হয়, মসজিদ কমিটি একজন কর্মচারীর স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা এবং সংশ্লিষ্ট ঝুঁকির ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এই সিদ্ধান্ত নেয়াটা স্বাভাবিক। এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল সম্ভবত মসজিদের ভিতরে অন্তত ৩০ জন মুসল্লি মসজিদের ভিতরের প্রধান হলে বিক্ষোভ করে বক্তব্য রাখেন এবং তাকে অপসারণ করার দাবি তুলেন। এছাড়া ইস্ট লন্ডন মসজিদের ইমাম মোহাম্মদ মাহমুদকে সড়ানোর শিরোনামে ওয়েব সাইট change.com এ একটি পিটিশন করা হয়েছে। এবং আরেকটি পক্ষ মাহমুদকে না সড়ানোর জন্য পিটিশন করেছে। পক্ষে এবং বিপক্ষে কতগুলো পিটিশন পড়লো তা বড় প্রশ্ন নয়। বড় প্রশ্ন হলো মসজি কমিটি কী সিদ্ধান্ত নিবেন ?
আমি ইস্ট লন্ডন মসজিদের বিবৃতি দেখেছি। তাদের বিবৃতি পড়ে একটু অবাক অবাক হলাম। বাংলায়একটা প্রবাদ আছে ‘ধরি মাছ না ছুঁই পানি’। মনে হচ্ছে তাদের বিবৃতিটা অনেকটা এই প্রবাদের সাথে মিলে গেছে। আমার মনে হয়, মসজিদ কমিটির অনেকগুলো সীমাবদ্ধতা, বিভিন্ন দিকবিবেচনা করে তারা কঠোর-লাইনের পন্থা অবলম্বন করেননি বা কোন পরিষ্কার বিবৃতি দেননি।কমিটি কেন পরিষ্কার করে উল্লেখ করেনি তারা তাদের ইমামের বক্তব্য এবং অনুষ্ঠানের উপস্থিতি সমর্থন করেন কী না?
মসজিদ কমিটি কেনই বা ইসলামিক পন্ডিতদের উপর ছেড়ে দিলেন আগামীতে এ ধরনের অনুষ্ঠানে উপস্থিতির ব্যাপারে। এই সিদ্ধান্ততো ইউরোপের বৃহত্তম মসজিদ ইস্ট লন্ডন মসজিদ নিজেই নিতে পারে। যে মসজিদে রয়েছে উচ্চ শিক্ষিত জ্ঞানীগুণি ইসলামি পন্ডিতগণ। মসজিদ কমিটি দ্রুত গতিতে এই বিষয়টির সমাধা করা এবং প্রয়েজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা, যদি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সঠিক সময়ে না নেয়া হয় তাহলে এই বৃহৎ মসজিদের অনেক ক্ষতি হতে পারে। শুধু মসজিদের ক্ষত হবে না, আঘাত লাগবে গোটা মুসলিম সম্প্রদায়ের উপর এবং এই আঘাত অনেক ক্ষতি বয়ে নিয়ে আসবে। আগেই বলেছি, মসজিদ কমিটির এ ব্যাপারে তাদের অবস্থান আরও পরিষ্কার করতে হবে। বিষয়টি আমার কাছে অত্যন্ত পরিষ্কার যে, ইস্ট লন্ডন মসজিদ কমিটি বর্তমান পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য ইমাম মাহমুদকে অস্থায়ীভাবে নামাজে ইমামতি করা থেকে বিরতি দেয়া হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, এটি ব্যবস্থাপনা কমিটির একটি কৌশলী পদক্ষেপ।
যে সকল মুসল্লি এবং যুবকরা মসজিদের ভিতরে নামাজের পরে দ্রুত গতিতে প্রতিবাদ সভা বাবক্তব্য প্রদান করেন, আমি সেই ভিডিওটি দেখেছি এবং তাদের কয়েকজনের মুখ আমি চিনি, আমি তাদের আগে দেখেছি কিন্তু তাদের নাম জানিনা। মনে হয় দু’একজন তারা কট্টরপন্থী একটি দলের সাথে জড়িত যারা ইসলামিক খলিফা রাজত্বে বিশ্বাসী এবং নারী ভোটাধিকারে বিশ্বাস করে না। কয়েক বছর পূর্বে, আমি যখন রমজানের সময় ইস্ট লন্ডন মসজিদে এতেকাফে ছিলাম, তখন সচক্ষে দেখেছি, যারা এখন ইমাম মাহমুদের অপসারণ চাচ্ছেন তাদের মধ্যে একজন মসজিদের ভিতরে ঝামেলা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার জন্য মসজিদের সিকিউরিটি জোরপূর্বক মসজিদ থেকে বের করে দেয়। এটা অত্যন্ত স্পষ্ট যে, এই অল্প সংখ্য মুসল্লি ও যুবকরা একত্রে মিলে কমিউনিটির মধ্যে ঘর্ষণ তৈরি করা এবং বদনাম নিয়ে আসা। যদিও আমি নিশ্চিত না এক পেছনে তাদের মূল এজেন্ডা কি? আমাদের এই অল্প সংখ্যক ঝামেলা সৃষ্টিকারীদের চিহ্নিত করে তাদের কার্যকলাপ সম্পর্কে আরও সতর্ক হওয়া উচিত।
আমার প্রশ্ন হলো, এই অল্প সংখ্যক প্রতিবাদকারীদের সাথে কিছু সংখ্যক মুসল্লিরা ইমাম মাহমুদকে অপসারণের দাবি তুলেন। যা ভাবতে অবাক লাগে। অকল্পনীয়। যে দলটি নারীদের ভোটে বিশ্বাসী নয় এবং খলিফা ব্যবস্থায় বিশ্বাসী! এটা খুবই দুঃখজনক আমাদের অল্প সংখ্যক প্রবীনরা তাদের সাথে যোগ দিয়ে মাহমুদের অপসারণ দাবী করছেন।আমি শুনেছি এবং নিজেও স্বচক্ষে উপলব্ধি করেছি, কিছু প্রবীণরা মাহমুদকে পছন্দ করেন না।কারণ তার ইংরেজী ওয়াজ বা বক্তব্য বুঝতে অসুবিধা হয়। শুধু তাই নয় মাহমুদ যখন ব্যায়ামের জন্য ব্যায়ামের কাপড় পরেন এবং স্বাস্থ্য ঠিক রাখার জন্য নিয়মিত দৌড়াদৌড়ি করেন তা নাকি তাদের কাছে গ্রহনযোগ্য নয়। এটা হাস্যকর, এটা অচিন্তনীয়, আমি কল্পনাও করতে পারি না যে বিলেত চতুর্থ প্রজন্মের মাইগ্রেশন সেটেলমেন্টের পরেও আমরা কতটা পিছিয়ে আছি। আমাদের চিন্তা ধারার পরিবর্তন হয়নি এই উন্নত সমাজে বাস করেও। মসজিদ কমিটির উচিত এসকল মুসল্লিদের জন্য বেইসিক ইসলামিক জ্ঞান ও আদব শেখানোর সেশন চালু করা এবং সাথে বৃটিশ নাগরিক হওয়ার মূলনীতি কি তাও অন্তর্ভুক্ত করা।
আমরা অভিবাসী হিসেবে এদেশে এসেছি, এখানে বসতি স্থাপন করেছি, ব্রিটিশ নাগরিকত্ব নিয়েছি, ব্যবসা করছি, সম্পূর্ণ স্বাধীনতা উপভোগ করছি, রাজনীতি করছি, অর্থ উপার্জন করছি, আমাদের প্রজন্মরা ভালো লেখাপড়া করে মূলধারাতে ভাল চাকরি করছে। স্বভাবতই আমরা এদেশের্ নাগরিক। যদিও ব্রিটেন বিশ্বের সবচেয়ে বৈচিত্রময় সমাজগুলির মধ্যে একটি, যেখানে মৌলিক মূল্যবোধ ও দায়িত্বকে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয়া হয়। তাই এদেশের নাগরিক হিসেবে আমাদের অবশ্যই মৌলিক মূল্যবোধ ও দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা। একজন নাগরিকের দায়িত্ব; ব্রিটেনের আইন মান্য ও সম্মান করা, অন্যের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সেই অধিকার গুলিকে সম্মান করা, অন্যদের সাথে ন্যায্য আচরণ করা, দায়িত্বশীল আচরণ করা, জাতি-ধর্ম-বর্ণ-শ্রেণী নির্বিশেষে সকলের সাথে সমান আচরণ ও সম্মান প্রদর্শন করা, স্থানীয় ও জাতীয় সরকার নির্বাচনে ভোট প্রদান করা।
আমার মনে হয়, যারা এদেশের নাগরিক হিসেবে উপরোক্ত মূল্যবোধ ও দায়িত্ব পালন না করেঅন্যর প্রতি অসম্মান বা অন্য ধর্মের প্রতি অসম্মান দেখান এবং নাগরিক হিসেবে সমাজকে বিভক্ত করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করেন তাদের বিকল্প চিন্তা করা উচিত। প্রত্যেক নাগরিককে তার দেশে আইন এবং নিয়ম কানুন মেনে চলা কর্তব্য। ইসলাম ধর্মেও রয়েছে, আপনি যে দেশের নাগরিক সেই দেশের আইনের আনুগত্য একটি ধর্মীয় কর্তব্য। এ ব্যাপারে ইসলামিক পন্ডিতরাই ভাল বলতে পারবেন। একজন প্রকৃত মুসলমানের দায়িত্ব যে সে যে দেশের নাগরিক সে দেশের আইন, নিয়মকানুন ও মৌলিক মূল্যবোধের প্রতি অনুগত থাকা এবং সম্পূর্ণরূপে মেনে চলা। যে সকলমুসল্লিরা ইমাম মাহমুদকে নিয়ে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করছেন তারা কী তাদের মৌলিক দায়িত্ববোধ ভূলে গেছেন?
ইমাম মাহমুদ রিজেন্টস পার্কের সেন্ট্রাল লন্ডন মসজিদের অনুষ্ঠানে যোগদান করেন, যেখানে তাকে একজন অতিথি হিসাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল এবং সেখানে তিনি রানীর মৃত্যুরশোক অনুষ্ঠানে একটি সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। তিনি সেখানে তার বক্তব্যে তুলে ধরেন মুসলমানদের দায়িত্ব এবং হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) সম্পর্কিত বাণী। সেখানে স্কুলের ছেলেমেয়েদেরদ্বারা জাতীয় সংগীত গাওয়ানো হয় যা দেশের স্বাভাবিক রীতি। বহু সংস্কৃতির ব্রিটেনে একজন ইমামের পক্ষে যা বলা উচিত সেই কথাগুলি ইমাম মাহমুদ রানীর শোক অনুষ্ঠানে তুলে ধরেছেন।ইমাম মাহমুদ তিনি সব সময়ই মুসলমানদের মর্যাদা সমুন্নত রাখার জন্য মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিত্ব করে যাচ্ছেন।
আমি অত্যন্ত আশ্চর্য ও দুঃখিত যে, আজ পর্যন্ত কোন ব্যক্তি, বিশিষ্ট আলেম/ইমামগণ, কোন ইসলামি সংগঠন অথবা মুসলিম কাউন্সিল অব ব্রিটেন, কাউন্সিল অব মস্ক মাহমুদের পক্ষে খোলাখুলিভাবে কথা বলেন নি বা বিবৃতি দেননি এই তথাকথিত প্রতিবাদকারী গ্রুপের বিরুদ্ধে ইমাম মাহমুদের সমর্থন জানিয়ে। তাহলে তারা কেন একজন ইমামের পক্ষে দাঁড়াচ্ছেন না? পেছনের কারণগুলো কী? তারা কী মাহমুদের জনপ্রিয়তায় ঈর্ষান্বিত? নাকি তারা অপসারণ গোষ্ঠীকে সমর্থন করছেন? নাকি মাহমুদ একজন অবাঙালি? যদি তাই না হয় তাহলে কেন ইসলামি স্কলাররা উন্মুক্তভাবে এগিয়ে এসে তাকে সমর্থন করে বিবৃতি ইস্যু করছেন না? যদি স্কলাররা বিবৃতি ইস্যু করেন তাহলে মসজিদ কমিটি তাতে সহায়ক হবে এবং শক্তি যোগাবে এবং তাতে মাহমুদের চলার পথ আরও সহজ হবে।
আমি ইমাম মাহমুদের সাথে আমার ব্যক্তিগত পরিচয় নেই। কিন্তু আমি উনার ইসলামিক ওয়াজ বা বক্তব্য শুনেছি, আমার খুব ভাল লাগে উনার ইসলামিক বিশ্লেষণ এবং সময় উপযোগী কথা বলেন। আমি আশাবাদী বর্তমান মসজিদ কমিট এমন কোন অপ্রীতিকর সিদ্ধান্ত নেবে না যা মসজিদ ও মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি অকল্পনীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে যা আমাদেরপক্ষে এই ক্ষতি বহন করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
নবাব উদ্দিন: সাবেক সম্পাদক, সাপ্তাহিক জনমত, সাবেক প্রেসিডেন্ট লন্ডন বাংলা প্রেস ক্লাব ও চেয়ারম্যান, ইস্ট হ্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল চ্যারেটি।